সফল উদ্যোক্তার ১০টি প্রধান বৈশিষ্ট্য

Spread the love

১। সুযোগ সন্ধানঃ একজন উদ্যোক্তা সর্বদা ব্যবসায় নতুন সম্ভাবনা খুঁজে বের করে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেন। অর্থ, জমি, যন্ত্রপাতি এবং কাজে স্থান বা অন্য কোন ধরনের সাহায্য পাওয়ার জন্য তিনি বিকল্প পথ খুঁজতে থাকেন। অর্থাৎ উদ্যোক্তাকে সুযোগ সন্ধানী হতেই হবে।

২। অধ্যবসায়ঃ যেকোন উদ্যোগ গ্রহণ করলে বাঁধা আসবেই কিন্তু সেই বাঁধা বা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে ভেঙ্গে না পড়ে বার বার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। ধৈর্য্য হারালে চলবে না। অর্থাৎ লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য বিকল্প পথের অনুসন্ধান করতে হবে।

৩। কাজের প্রতিশ্রুতি রক্ষাঃ সময়ের কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করার প্রতি সার্বিক গুরুত্ত দিতে হবে। প্রয়োজনে, শ্রমিক এবং কর্মচারীদের সাথে কাজ করা কিংবা তাদের উৎসাহিত করা যাতে কোন ভাবেই কাজের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ না হয়। অর্থাৎ যেকোন ধরনের উদ্ভুত সমস্যার সার্বিক দায়িত্ত নিজের কাঁধে নেবার মানসিকতা থাকতে হবে।

৪। যোগ্যতা ও দক্ষতার চাহিদাঃ ক্রেতার চাহিদার কথা মাথায় রেখে পণ্য তৈরি করা বা সেবা নিশ্চিত করা। সর্বদা উন্নত, দ্রুত এবং ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার কথা চিন্তায় রেখে পণ্য বা সেবা পরিকল্পনা করা উচিত। উদ্যোক্তাকে অবশ্যয়ই বাজারে প্রতিযোগীতায় টিকে থাকার দক্ষতা অর্জন করতে হবে। সেজন্য, প্রচুর পড়াশুনা এবং নানা ধরনের ট্রেনিং করতে হবে।

৫। ঝুঁকি গ্রহণঃ উদ্যোক্তা হবেন কিন্তু ঝুঁকি নিবেন না তা হবে না। একজন উদ্যোক্তাকে অবশ্যয়ই পরিমিত ঝুঁকি গ্রহণের বেপারে মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। যেকোন সময়ে যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হতে পারে যার জন্য আপনি প্রস্তুত ছিলেন না। অর্থাৎ ব্যবসার শুরুতে একটি ঝুঁকি ম্যানেজমেন্টের জন্য ফান্ড বরাদ্ধ রাখতে পারেন বা ব্যাংকে ফোর্স লোন হিসেবে প্রতি মাসে কিছু টাকা জমা রাখতে পারেন।

৬। লক্ষ্য নির্ধারণঃ উদ্যোক্তা হিসেবে আপনার অবশ্যয়ই স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিষ্কার লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে এবং এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে নিয়মিত কাজ করে যেতে হবে। কোথাও বাঁধা আসলে প্রযুক্তি এবং সময়ের বিবেচনায় পরিকল্পনা পুনর্বিন্যাস করা প্রয়োজন তবে স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্য থেকে সরে আসা যাবে না।

৭। তথ্য অনুসন্ধানঃ উদ্যোক্তাকে টিকে থাকতে অবশ্যয়ই বাজার ব্যবস্থাপনার নানাবিধ তথ্য সর্বদা অনুসন্ধান করতে হবে। নিজে সরাসরি ক্রেতা কিংবা সরবরাহকারী বা প্রতিযোগীতা সম্পর্কে খোজ খবর নিতে হবে। বিভিন্ন ভাবে তথ্য অনুসন্ধান করতে হবে, যেমন- নিজের এবং ব্যবসায়িক বিভিন্ন পরিচিত ব্যক্তি বা সোশ্যাল মিডিয়া নেটয়ার্ক কাজে লাগানো যেতে পারে। প্রতিদিনের খবর এবং সংবাদপত্র পড়ার অভ্যাস এক্ষেত্রে কিছুটা সহযোগীতা করবে।

৮। সঠিক পরিকল্পনা এবং পরিচালনাঃ পরিকল্পনা অবশ্যয়ই বাস্তবধর্মী হতে হবে। অর্থাৎ লক্ষ্য অর্জনে বাস্তব ভিত্তিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করে যেতে হবে। প্রতিদিনের সকল হিসাবনিকাশ প্রতিদিন সম্পন্ন করা কারণ এই আর্থিক রেকর্ড পরবর্তি সিদ্ধান্ত গ্রহণে খুবই কাজে লাগে।

৯। উদ্ভুদ্ধকরণ এবং সম্পর্ক স্থাপনঃ নিজের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য অন্যকে প্রভাবিত করতে বিভিন্ন ধরনের পথ বা উদ্যোগ গ্রহণ করা। পাশাপাশি ব্যবসায়িক যোগাযোগ বৃদ্ধির নেটওয়ার্ক তৈরী করা। নিজেদের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীর পাশাপাশি প্রতিবেশী কিংবা দূরের ক্রেতার মধ্যে সম্পর্ক তৈরী এবং তা মজবুত করতে সর্বদা সচেষ্ট থাকা। অর্থাৎ ব্র্যান্ড তৈরী করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

১০। আত্মবিশ্বাসঃ একজন উদ্যোক্তাকে অবশ্যয়ই নিজের ক্ষমতা এবং বুদ্ধিমত্তার উপর আস্থাশীল হতে হবে। অনেক কথায় কান দেওয়া বা প্রভাবিত হওয়া যাবে না। সর্বদা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার মানসিকতা থাকতে হবে। ধীর স্থির ভাবে নিজে লক্ষ্য অর্জনে কাজ করতে হবে। সেলফ মোটিভেটেড হতে হবে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবেই কিন্তু হতাশ হওয়া চলবে না। পূর্বে অসফল হয়েছিলেন বলে তা বার বার মনে না করে তার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন যাতে বর্তমানের উদ্যোগ সফল হয়। মনে রাখবেন, বাঁধা না আসলে জয়ের স্বাদ পাওয়া যায় না।